দুই বছর দুপুরে ভাত খাননি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা!

এহসান জুয়েল

১৯৯৬-৯৮ সালের এ ঘটনাটি সম্প্রতি জানা গেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে। তথ্যটি নেটিজেনদের সঙ্গে ফেসবুকে শেয়ার করেছেন সিনিয়র সাংবাদিক ও প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদ।

ইতিহাসের নানা তথ্য তিনি তার ব্যক্তিগত প্রোফাইল থেকে শেয়ার করে থাকেন। মঙ্গলবার (০৩ আগস্ট) দুপুরে ফেসবুকে শেয়ার করা স্ট্যাটাসে দেখা যায়, তিনি লিখেছেন, ‘কখনো উচ্ছল, শান্ত, কখনো দুরন্ত। কখনো ভীষণ একরোখা, প্রচণ্ড জেদী। ভাঙবেন কিন্তু মচকাবেন না। এমন স্বভাবের মানুষটিকে দুই বছর কেউ দুপুরে ভাত খাওয়াতে পারেনি। কারও অনুরোধই শোনেনি। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার কথা বলছি।

১৯৯৬ সালে যখন রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসেন, ক্ষমতায় এসেই শেখ হাসিনা প্রথম দরবার হলে গিয়ে জানতে চান সেনাবাহিনীর কী কী সমস্যা আছে। সেনাবাহিনী সদস্যরা তাকে জানান, তারা দুপুরে ভাত খেতে চান। তখন তারা দুপুরে শুধু রুটি খেতেন। কথাটা বঙ্গবন্ধু কন্যাকে খুবই মর্মাহত করে।

শেখ হাসিনার সরকার সদ্য ক্ষমতায়। দেশে তখন খাদ্য ঘাটতি। তিনি প্রতিজ্ঞা করলেন দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ না করে, সেনাবাহিনীর জন্য দুপুরে ভাত খাওয়ার ব্যবস্থা না করা পর্যন্ত তিনিও দুপুরে ভাত খাবেন না। সেনাবাহিনীর সদস্যদের প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ করে সেদিন থেকেই দুপুরে ভাত খাওয়া বন্ধ করে দিলেন বঙ্গবন্ধু কন্যা।

দেশ, দেশের মানুষের কল্যাণ স্বার্থে ভীষণ একরোখা, প্রচণ্ড জেদী তিনি। ৯৬ থেকে ৯৮ দুই বছর নেতাকর্মী, শুভাকাঙ্ক্ষি, আত্মীয়-স্বজন কেউ তাকে দুপুরে ভাত খাওয়াতে পারেনি। ১৯৯৮ সালে তার সরকার দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করে। সেনা সদস্যদের জন্য দুপুরে ভাত খাওয়ার ব্যবস্থা করতে সক্ষম হয়। তিনি প্রতিজ্ঞা রাখলেন। অতঃপর সেনানিবাসে এসে সেদিন তাদের সঙ্গে বসে দুপুরে ভাত খান। এরপর থেকে আবার দুপুরে ভাত খাওয়া শুরু করলেন সূর্যদীপ্ত রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা।

সত্যিই তার তুলনা শুধু তিনিই। শেখ হাসিনাকে বুঝতে হলে শেখ হাসিনাকে জানতে হবে।’

এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে একুশে পদকপ্রাপ্ত সাংবাদিক ও কবি জাফর ওয়াজেদ জানান, ২ বছর আগের এইদিনে তিনি প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে ফেসবুকে এ বিষয়ে পোস্ট করেন। আজ মঙ্গলবার (৩ আগস্ট) ফেসবুকের মেমোরিতে বিষয়টি উঠে আসলে তিনি তা পুনরায় শেয়ার করেন।

এতদিন পর হঠাৎ এমন স্ট্যাটাস শেয়ার দেওয়ার কারণ জানতে চাইলে সময়নিউজকে তিনি বলেন, শোকাবহ এই আগস্ট মাসেই কিছু বিপথগামী সেনা সদস্যের হাতে নিহত হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরিবারের সদস্যরা। বর্তমানে সেই সেনাবাহিনীর সদস্যদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেভাবে সহমর্মিতা এবং তাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন তা প্রশংসনীয়। সেই শোকাবহ আগস্ট মাসকে পুনরায় স্মরণের জন্যই আমার এই স্ট্যাটাস।

তিনি বলেন, এছাড়া বর্তমান এই করোনার সময়ে অনেক মানুষ অসহায় দিন যাপন করছেন তাদের জন্যও আমার এই স্ট্যাটাসটি শিক্ষণীয়। কারণ প্রধানমন্ত্রী নিজেই দুই বছর দুপুরে ভাত খাননি। এখান থেকেও অনেকে শিক্ষা নিতে পারেন।