বঙ্গবন্ধু হত্যার ষড়যন্ত্রে জিয়া জড়িত, এটা ঐতিহাসিক সত্য

সরকারের ব্যর্থতা প্রমাণের জন্য অমানবিক রাজনীতি করছে লাইফ সাপোর্টে থাকা বিএনপি

বঙ্গবন্ধু হত্যার ষড়যন্ত্রে জিয়াউর রহমানের জড়িত থাকার বিষয়টি ঐতিহাসিক সত্য বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার প্রক্রিয়া বন্ধের জন্য প্রণীত ইনডেমনিটি অধ্যাদেশকে পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে আইনে পরিণত করে বৈধতা দিয়েছিলেন সেনাশাসক জিয়া। সেনা আইন ও সংবিধান লঙ্ঘন করে সেনাছাউনিতে জন্ম নেওয়া বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান ক্ষমতার অপব্যবহার করে জাতির পিতার খুনিদের আশ্রয়-প্রশ্রয় এবং বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দিয়ে পুরস্কৃত করেছিলেন।
সমকালের সঙ্গে বিশেষ সাক্ষাৎকারে ওবায়দুল কাদের আরও বলেছেন, সংকট সমাধানে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সক্ষমতা দেখে ঈর্ষার আগুনে পুড়ছে লাইফ সাপোর্টে থাকা বিএনপি। সরকারের ব্যর্থতা প্রমাণের জন্য তারা অমানবিক রাজনীতি করছে। তিনি জনকল্যাণমুখী রাজনীতিতে অংশ নেওয়ার জন্য বিএনপির প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
সাক্ষাৎকারে ওবায়দুল কাদের করোনাকালে সরকারের পদক্ষেপ, রাজনৈতিক পরিস্থিতি, রাজনৈতিক দলের ভূমিকা, জনপ্রতিনিধি ও কমিউনিটি লিডারদের সম্পৃক্ততা, চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য খাতে অব্যবস্থাপনা এবং অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ, শিক্ষাঙ্গন খুলে দেওয়া, আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতি, মহাজোটের পরিধি বাড়ানো, আফগানিস্তানে তালেবানের উত্থানসহ সম-সাময়িক বিভিন্ন বিষয়ে খোলামেলা কথা বলেছেন।
সমকাল :করোনাকালে রাজনৈতিক পরিস্থিতি কেমন মনে করছেন? কোনো সংকট দেখছেন কি?
ওবায়দুল কাদের :করোনাকাল জীবনের সব কিছুকেই সংকটে ফেলেছে। রাজনৈতিক পরিস্থিতি এর বাইরে নয়। এ ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের চ্যালেঞ্জ হলো- মানুষকে সচেতন করা এবং অসহায় খেটে খাওয়া মানুষের পাশে দাঁড়ানো, যা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনীতির প্রধানতম শিক্ষা। তা ছাড়া পৃথিবীর কেউই করোনা পরিস্থিতিকে গুরুত্বহীন মনে করছেন না। করোনা মোকাবিলা করতে না পারলে রাজনৈতিকভাবে পদে পদে ক্ষতি হবে। যেমন করোনার কারণে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন হচ্ছে না। আওয়ামী লীগের মেয়াদোত্তীর্ণ জেলা-উপজেলা কমিটির সম্মেলন কার্যক্রম আটকে আছে।
সমকাল :করোনা সংকটে রাজনৈতিক দল ও রাজনীতিবিদদের ভূমিকা কী হওয়া উচিত বলে মনে করছেন?
ওবায়দুল কাদের :এই বিপদে বিচ্ছিন্নভাবে কেউ কেউ মানুষের পাশে থাকলেও আওয়ামী লীগের ইতিবাচক ভূমিকা সামগ্রিকভাবে দৃশ্যমান। আর কেউ কি আওয়ামী লীগের মতো কার্যকরভাবে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে? প্রধানমন্ত্রী নিজে করোনা-সংক্রান্ত কার্যক্রম তদারকি ও মনিটর করছেন। বাস্তবসম্মত রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। দক্ষভাবে তা বাস্তবায়ন করছেন। এই সময় সরকারকে সহযোগিতা করা উচিত ছিল সকল রাজনৈতিক দলের। অথচ একটি মহল সরকারের ব্যর্থতা প্রমাণের জন্য অমানবিক রাজনীতি করছে। এর অবসান দরকার। এখন মানুষ বাঁচানোর রাজনীতি করতে হবে রাজনৈতিক দল ও রাজনীতিবিদদের।
সমকাল :সঠিক ভূমিকা পালনের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলোর সামনে কী কী অন্তরায় রয়েছে?
ওবায়দুল কাদের :মানসিকতাই একমাত্র অন্তরায়। সরকার বিপদে পড়ূক, এটাই বিএনপির একমাত্র চাওয়া। করোনাকালেও অর্থনীতি চাঙা; উন্নয়ন এবং অগ্রগতির ধারা অব্যাহত রয়েছে। এসব তাদের সহ্য হচ্ছে না। বিএনপি নেতারা অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছেন। বলেছেন, এই টিকা নিলে মৃত্যুঝুঁকিতে পড়তে হবে। অথচ তারাই সেই টিকা নিয়েছেন। এখন গণটিকা কার্যক্রমের সমালোচনা করছেন। এই ঘৃণ্য মানসিকতা ছাড়তে হবে। ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে। সবাইকে বিপন্ন মানুষের পাশে থাকতে হবে। সবাই এগিয়ে এলে সংকট উত্তরণে সহায়ক পরিবেশ তৈরি হবে।
সমকাল :করোনা মোকাবিলায় সরকারের পদক্ষেপ কি যথেষ্ট?
ওবায়দুল কাদের :করোনা মোকাবিলায় জাতীয় ঐক্যের কথা বলছে বিরোধী দল। এটা উদ্ভট দাবি। দুনিয়ার কোথাও এরকম হয়নি। আর করোনা মোকাবিলার অভিজ্ঞতা কারোরই নেই। তাই শুরুর দিকে সংকট থাকলেও সেই পরিস্থিতির উত্তরণ ঘটেছে। ছোটোখাটো ভুল-ত্রুটি থাকলেও সরকার তা সংশোধন করেছে। বিশেষজ্ঞদের নিয়ে পরামর্শক কমিটি করেছে। সফলভাবেই গণটিকা কার্যক্রম বাস্তবায়ন হচ্ছে। প্রচুর টিকা মজুত রয়েছে। তবুও আন্দোলন এবং নির্বাচনে ধারাবাহিকভাবে ব্যর্থ বিএনপি গণহতাশা থেকে অহেতুক ঢালাও অপপ্রচার ও বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। সংকট সমাধানে প্রধানমন্ত্রীর সক্ষমতা দেখে ঈর্ষার আগুনে পুড়ছে। তবে তারা না চাইলেও পর্যাপ্ত ভ্যাকসিন এসে গেছে। হাসপাতালগুলোতে আইসিইউ শয্যা বাড়ানো হয়েছে। অক্সিজেনের ঘাটতি নেই। অর্থাৎ করোনা মোকাবিলায় যা কিছু করার প্রয়োজন, তার সব কিছুই করা হচ্ছে।
সমকাল :চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য খাতে অব্যবস্থাপনা এবং অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে জনমনে অসন্তোষ রয়েছে। এটা কীভাবে দেখছেন?
ওবায়দুল কাদের :এ সব বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী নিজেই খোঁজ-খবর রাখছেন। যে সব বিষয়ে বিশৃঙ্খলা ছিল, সেসব ক্ষেত্রে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য খাতে রদবদল হয়েছে। প্রয়োজনে আরও হবে। তা ছাড়া অনিয়ম-দুর্নীতির বিষয়গুলো দেখছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এখানে একটি কথা খুব স্পষ্ট, অনিয়ম-দুর্নীতির বেলায় প্রধানমন্ত্রী বিন্দুমাত্র ছাড় দেননি। ভবিষ্যতেও দেবেন না।
সমকাল :অনেকেই মনে করছেন, করোনা মোকাবিলায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে। আপনার অভিমত কী?
ওবায়দুল কাদের :এমন কিছু হয়ে থাকলে দুদক তদন্ত করে দেখুক। সেই তদন্তে কেউ দোষী হলে তাকে অবশ্যই শাস্তি পেতে হবে। আর স্বাস্থ্য খাতের ঘাটতি মোকাবিলা করা হচ্ছে। তবে সব ভালো যার, শেষ ভালো তার। সুতরাং অপেক্ষা করুন এবং দেখুন। দিন শেষে দেশবাসী খুশিই হবে। কেননা সব ঘাটতি সফলভাবে মোকাবিলা করে করোনায় সৃষ্ট বিরূপ পরিস্থিতি সামাল দিতে পারবেন প্রধানমন্ত্রী।
সমকাল :শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে সরকারের সিদ্ধান্ত নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। এ পরিস্থিতিকে কীভাবে দেখছেন?
ওবায়দুল কাদের :শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের ক্ষতি হচ্ছে, যা ভবিষ্যতে আরও ক্ষতি ডেকে আনতে পারে। কিন্তু আগে তো তাদের জীবন রক্ষা করতে হবে। জীবনই যদি না থাকে, তা হলে শিক্ষা দিয়ে কী হবে? অবশ্য পর্যায়ক্রমে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার কথা ভাবছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি শিক্ষার্থীদের ভ্যাকসিন দেওয়ার কথাও চিন্তা করছেন।
সমকাল :করোনা মোকাবিলায় জনপ্রতিনিধি ও কমিউনিটি লিডাররা পিছিয়ে আছেন। তাদের কীভাবে সম্পৃক্ত করা যায়?
ওবায়দুল কাদের :বেশিরভাগ জনপ্রতিনিধিই করোনা মোকাবিলা কার্যক্রমে সক্রিয় রয়েছেন। কমিউনিটি লিডারদের মধ্যে অনেকেই এই কার্যক্রমে সম্পৃক্ত হয়েছেন। এই সংখ্যা আরও বেশি হলে ভালো হতো। কিন্তু সরকার তো কিছু চাপিয়ে দিতে পারে না। তবে সরকারের পক্ষ থেকে কমিউনিটি লিডারদের আরও সম্পৃক্ত করার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। সেই সঙ্গে দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ জনপ্রতিনিধিদের তালিকা করা হচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিকভাবে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সমকাল :করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরকার ব্যর্থ হয়েছে বলে বিএনপি দাবি করছে। আপনার বক্তব্য কী?
ওবায়দুল কাদের :করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরকার শতভাগ সফল। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার সুদক্ষ নেতৃত্বে সরকার মানুষের জীবন-জীবিকা রক্ষার জন্য প্রাণপণ কাজ করছে। কোনো মানুষ না খেয়ে মরেনি। খাদ্য সহায়তার পাশাপাশি নগদ অর্থ ও প্রণোদনা প্যাকেজ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। গৃহহীনরা ঘর পাচ্ছেন। কিন্তু লাইফ সাপোর্টে থাকা বিএনপি প্রতিদিন ভ্রান্ত, মিথ্যা ও বানোয়াট বক্তব্য দিয়ে মানুষের দুর্ভোগ বাড়িয়ে চলেছে।
সমকাল :সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেওয়ার কথা বলছে বিএনপি। আপনি কী মনে করেন?
ওবায়দুল কাদের :আওয়ামী লীগ কখনোই দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেয়নি। প্রধানমন্ত্রী শতভাগ সততা ও স্বচ্ছতার সঙ্গে সরকার পরিচালনা করছেন। অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে তার সরকারের অবস্থান অত্যন্ত কঠোর এবং স্পষ্ট। তিনি ক্যাসিনো কেলেঙ্কারিতে জড়িতদের ছাড় দেননি। আওয়ামী লীগের এমপিরাও ছাড় পাননি। দুদক তাদের ব্যাপারেও তদন্ত করেছে। বিএনপি একটি উদাহরণ দিক যে, তারা ক্ষমতায় থাকাকালে দুর্নীতি-অনিয়মে সম্পৃক্ত তাদের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিয়েছে, কেউ জেলে গেছে কিংবা সাজা পেয়েছে। বিএনপির মুখে সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির কথা শোভা পায় না। তারা দলের শীর্ষ নেতাদের দুর্নীতিকে রাজনৈতিকভাবে স্বীকৃতি দিয়ে দুর্নীতিবাজ দলে পরিণত হয়েছে। এ জন্য নির্লজ্জভাবে দলের গঠনতন্ত্রও সংশোধন করেছে।
সমকাল :বঙ্গবন্ধু হত্যার ষড়যন্ত্রে জিয়াউর রহমানের জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করছে বিএনপি। তারা বলছে, বঙ্গবন্ধু হত্যার ষড়যন্ত্রকারীদের কেউ কেউ আওয়ামী লীগ ও মহাজোটে রয়েছে। আপনার মন্তব্য কী?
ওবায়দুল কাদের :বঙ্গবন্ধু হত্যার ষড়যন্ত্রে জিয়াউর রহমানের জড়িত থাকার বিষয়টি ঐতিহাসিক সত্য। সেনাশাসক জিয়াচক্র অসাংবিধানিক উপায়ে অবৈধভাবে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করেছিলেন। বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার প্রক্রিয়া বন্ধের জন্য প্রণীত ঘৃণ্য ইনডেমনিটি অধ্যাদেশকে পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে আইনে পরিণত করে বৈধতা দিয়েছিলেন। ক্ষমতার অপব্যবহার করে জাতির পিতার খুনিদের আশ্রয়-প্রশ্রয় এবং বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দিয়ে পুরস্কৃত করেছিলেন। সেনা আইন ও সংবিধান লঙ্ঘন করে সেনা ছাউনিতে জিয়ার প্রতিষ্ঠিত বিএনপি হত্যা, ক্যু ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতিকে বৈধতা দিয়েছিল। বঙ্গবন্ধু হত্যার পর পাকিস্তানি ভাবাদর্শের আদলে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী স্বৈরশাসক জিয়া বাংলাদেশকে খাদের কিনারায় নিয়ে গিয়েছিলেন। যাই হোক, ইতিহাসের কোনো সত্যই নতুন প্রজন্মের কাছে আড়াল করা উচিত নয়। তাই আগামী দিনের রাজনীতিতে অবশ্যই বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যের কুশীলবদের বিষয়টি তদন্তের মাধ্যমে উদ্ঘাটন করা হবে।
সমকাল :ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাচ্ছেন?
ওবায়দুল কাদের :জাতির পিতা হত্যাকাণ্ডের বেনিফিশিয়ারি হিসেবে চিহ্নিত বিএনপিসহ অন্য অপশক্তিগুলো দেশ এবং জাতির ক্রান্তিকালেও ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। চিহ্নিত এই মতলবি অপশক্তি শেখ হাসিনার সরকার ও বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র এবং চক্রান্ত করছে। তারা অগণতান্ত্রিক ও অসাংবিধানিক উপায়ে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখলের দুঃস্বপ্নে বিভোর। রাজনৈতিক অপলাপের আড়ালে খুনি, সন্ত্রাসী ও জঙ্গিবাদকে পৃষ্ঠপোষকতাই তাদের মূল লক্ষ্য।
সমকাল :বিএনপির উদ্দেশে আপনার আহ্বান কী?
ওবায়দুল কাদের :বিএনপি নেতাদের অনেকেই ওষুধ কোম্পানির মালিক। তারা তো করোনা চিকিৎসার জন্য ওষুধসামগ্রী দিতে পারেন। তারা সেটাও করছেন না। শুধু সরকারের দোষ খুঁজছেন। অন্যদিকে জনগণের জীবন ও জীবিকার সুরক্ষায় প্রধানমন্ত্রীর নিরলস পরিশ্রম ও সুদক্ষ নেতৃত্বে সরকার একনিষ্ঠভাবে কাজ করছে। পরিতাপের বিষয়, সরকারের কোনো ভালো কাজ কখনোই বিএনপি নেতারা দেখতে পাচ্ছেন না। মহামারির কঠিন পরিস্থিতিতেও দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল হিসেবে কাজ না করে তারা বক্তৃতা-বিবৃতির মাধ্যমে মানুষের দুর্ভোগ বাড়াচ্ছেন। নিজেদের আরামপ্রদ গৃহকোণে নিরাপত্তাবলয়ে অবস্থান করে গণমাধ্যমে শুধু লিপ সার্ভিস দিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত ও আতঙ্কিত করার পাঁয়তারা করছেন। অথচ এই সময়ে মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে তাদের জনকল্যাণমুখী রাজনীতি করা উচিত।
সমকাল :আগামী নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের প্রস্তুতি কী?
ওবায়দুল কাদের :আওয়ামী লীগ সব সময়ই নির্বাচনমুখী রাজনৈতিক দল। নির্বাচনের মধ্য দিয়েই সব সময় ক্ষমতায় এসেছে এ দল। সুতরাং সব সময়ই নির্বাচনের প্রস্তুতি থাকে আওয়ামী লীগে। তবে করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে পুরোদমে নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়া হবে। প্রথমেই সম্মেলনের মাধ্যমে দলকে তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত ঢেলে সাজানো হবে।
সমকাল :মহাজোটের পরিধি বাড়ানোর কোনো পরিকল্পনা আছে?
ওবায়দুল কাদের :একা নয়, সবাইকে নিয়ে পথ চলাতেই আওয়ামী লীগের স্বস্তি। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ১৪ দলীয় জোট এবং মহাজোট রয়েছে। ১৪ দলীয় জোট আদর্শিক, মহাজোট নির্বাচনকেন্দ্রিক। আগামী নির্বাচন ঘনিয়ে এলে এই জোটের পরিধি আরও বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে।
সমকাল :আফগানিস্তানে তালেবানের উত্থান কোন দৃষ্টিতে দেখছেন?
ওবায়দুল কাদের :সতর্কতার সঙ্গে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।
সমকাল :দেশবাসীর প্রতি আপনার আহ্বান কী?
ওবায়দুল কাদের :করোনা কাউকে চেনে না। সুযোগ পেলে কাউকেই ছাড় দেবে না। তাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন। মাস্ক ব্যবহার করুন। সচেতনতার দুর্গ গড়ে তুলুন। ধৈর্য হারাবেন না। প্রধানমন্ত্রী আপনাদের সঙ্গে আছেন। তার ওপর আস্থা রাখুন।