বিএনপির প্রোপাগান্ডা সেলের সক্রিয় নতুন সদস্য শাখাওয়াত টিটু!

সরকারের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক আন্দোলন নয় বরং সরকারের বিরুদ্ধে নানারকম মিথ্যা, অপপ্রচারই বিএনপির প্রধান কৌশল। দেশে-বিদেশে বিএনপি এরকম ১ হাজার ব্যক্তিকে নিযুক্ত করেছে। তাদের একমাত্র কাজ হলো সরকারের বিরুদ্ধে নানারকম মিথ্যা তথ্য উপস্থাপন করা। 
 
এই সমস্ত তথ্য গুলোকে আবার বিএনপি নেতারা তাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক, ইউটিউবে প্রচার করছে। অর্থাৎ সরকারের বিরুদ্ধে রাজপথে আন্দোলন নয় বরং ডিজিটাল জগতে সাইবার ওয়ারের মধ্যে আছে বিএনপি। আর তার সঙ্গে যোগ দিয়েছে জামায়াতে ইসলাম। লন্ডন এবং যুক্তরাষ্ট্র থেকে কতিপয় বিকারগ্রস্ত মানসিকতার লোকজন দিয়ে এসব কাজ করিয়ে যাচ্ছে বিএনপির পলাতক নেতা তারেক রহমান। এ দলে কয়েকজন সামরিক বাহিনীর বরখাস্ত কর্মকর্তা থেকে শুরু করে দেশে নারী কেলেংকারির দায়ে চাকরি হারানো কতিপয় সাংবাদিক নামধারীরাও রয়েছে। এ দলের নতুন সক্রিয় সদস্য হিসাবে কাজ করছেন এ্যাড. শাখাওয়াত হোসেন টিটু। কনক সারোয়ার, ইলিয়াস হোসেনের মতো সরাসরি বিএনপি জামায়াতের এজেন্ডা বাস্তবায়ন না করে এই টিটু যুক্তরাজ্যে অবস্থান করে আওয়ামী লীগের সক্রিয় লোক হিসাবে সরকার ও দলের বিরুদ্ধে প্রপোগান্ডা ছাড়াচ্ছে। এক্ষেত্রে ‘কচুয়ার ডাক’ নামের একটি অনলাইন প্লাটফর্মকে বেছে নিয়েছে টিটু। 
 
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের চরিত্রহননের পাশাপাশি হেফাজতের পক্ষেও সরাসরি অবস্থান নিয়েছিলেন এই শাখাওয়াত হোসেন টিটু। এই টিটু নিজেকে সাবেক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী এবং চাঁদপুর ১ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য মহিউদ্দিন খান আলমগীরের উত্তরসূরী হিসাবে নিজেকে ভবিষ্যতে ওই আসনের নৌকার প্রার্থী হিসাবে ইতিমধ্যেই পোস্টার ও বিলবোর্ড প্রচার করেছেন। আগামীতে চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের কমিটিতে নিজেকে সাংগঠনিক সম্পাদক পদও তিনি বাগিয়ে নিবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন। এ বিষয়ে মহিউদ্দিন খান আলমগীরকে ফোন করা হলে তার ব্যবহৃত ‍দু’টো নম্বরই বন্ধ পাওয়া গেছে। 
 
তবে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ বলেন, দেশের বাইরে বসে সরকার এবং দলের নেতাদের বিরুদ্ধে যে বা যারাই মিথ্যা প্রচারণা চালাবে তাদের কেউ আওয়ামী লীগ করার সুযোগ পাবে না। এমনকি তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। 
 
উল্লেখ্য যে, সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপি নতুন করে আন্দোলন শুরু করার হুমকি দিচ্ছে। দুই দফায় বিএনপির ছয় দিনব্যাপী বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছে। বিএনপি অবশ্য এই সমস্ত বৈঠক থেকে আন্দোলনের কোনো কর্মসূচি ঘোষণা করেনি। এই চলতি সপ্তাহেই বিএনপি বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক করবে বলে বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে। কিন্তু বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে যে, আন্দোলনের কথাগুলো বলা হচ্ছে সেগুলো শুধু মাত্র কথার খাতিরে। আসলে বিএনপি এরকম কোন আন্দোলনের কর্মসূচিতে আপাতত যাবেনা। বরং বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে সরকারের বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রচার করা এবং জনগণকে বিভ্রান্ত করাই তাদের প্রধান কৌশল। বিএনপির এসকল প্রোপাগান্ডা মূলক কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে তারেক জিয়ার মাধ্যমে। লন্ডনে তারেক জিয়া হাওয়া ভবনের আদলে আরেকটি অফিস খুলেছেন। সেখানে তারেক জিয়ার সঙ্গে হারিছ চৌধুরী, ড. কামাল হোসেনর জামাতা ডেভিড বার্গম্যান কাজ করছেন। আর এই অফিসের মাধ্যমেই দেশে-বিদেশে প্রোপাগান্ডার জন্য কিছু ব্যক্তিকে নিযুক্ত করা হচ্ছে, এদেরকে মাসিক মাসোয়ারা দেওয়া হচ্ছে।
 
বিএনপির বিভিন্ন সূত্র বলছে যে, প্রতি মাসে অন্তত ১০ থেকে ২০ কোটি টাকা তারা শুধু অপপ্রচারের জন্য খরচ করছেন। এই সমস্ত অপপ্রচারকারীদের প্রধান কাজ হচ্ছে আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অবাস্তব, নোংরা, কুৎসিত ইস্যু উত্থাপন করা এবং সেগুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া। এই মুহূর্তে বিএনপির টাকায় দেশে-বিদেশে ৫৬টি ইউটিউব চ্যানেল চলছে, ৭২টি ফেসবুক পেইজের মাধ্যমে বিভিন্ন রকম আক্রমণ করা হচ্ছে। লক্ষণীয় ব্যাপার হলো, এই সমস্ত ইউটিউব চ্যানেল এবং ফেসবুক পাতাগুলো অভিন্ন ভাষায় কথা বলছে। সাম্প্রতিক সময়ে প্রধানমন্ত্রীর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগদান নিয়ে সিন্ডিকেট অপসাংবাদিকতার এক ভয়াবহ প্রবণতা লক্ষ্য করা যায় এবং এই সমস্ত প্রোপাগান্ডা তথ্য-উপাত্ত সরবরাহ করছেন তারেক জিয়া। তারেক জিয়াকে আওয়ামী লীগ বিরোধী অপপ্রচারের প্রধান পরামর্শদাতা হচ্ছেন ডেভিড বার্গম্যান।
 
ডেভিড বার্গম্যান বিভিন্ন ইস্যুগুলো আনছেন এবং সেই ইস্যুগুলো কিভাবে কোন ইউটিউব চ্যানেলে বা আইপিটিভিতে কি প্রচার হবে সে সম্পর্কে নির্দেশনা দিচ্ছেন। এই নির্দেশনা অনুযায়ী বিএনপির পয়সায় গড়ে ওঠা সাইবার ক্রিমিনালরা অপপ্রচারের কাজ করছে। আগে মোটা দাগে চার-পাঁচজন পরিচিত ব্যক্তি ছিলো যারা এই সমস্ত অপপ্রচারের সঙ্গে যুক্ত থাকতেন কিন্তু এখন এই সংখ্যা বেড়ে গেছে। মজার ব্যাপার হলো যে, এই মিথ্যাচার গুলো যখন ঐ সমস্ত টকশোতে বা ফেসবুকে দেয়া হচ্ছে তার পরপরই বিএনপির অফিশিয়াল ফেসবুকে এই সমস্ত অসত্য তথ্য গুলোকে আবার পুনঃপ্রকাশিত করা হচ্ছে। কিন্তু সরকার এখন পর্যন্ত এগুলোর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।


 
নিজে আইনজীবী হওয়ার কারণে ডেভিড বার্গম্যানের পরামর্শ নিয়ে এ্যাড. শাখাওয়াত হোসেন টিটু আওয়ামী লীগ এবং বিশেষ করে সাবেক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী মহিউদ্দিন খান আলমগীরের নাম ভাঙিয়ে সরকার এবং দলের নেতাদের বিরুদ্ধে প্রপোগান্ডা ছড়াচ্ছে। 
 
এসব অভিযোগের বিষয়ে সরাসরি শাখাওয়াত হোসেন টিটুর নম্বরে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি। এমনকি হোয়াটসআ্যাপে ফোন করা হলেও তিনি তা রিসিভ করেননি।