ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হেফাজতের ১০ নেতাকর্মী গ্রেপ্তার

হেফাজতে ইসলামের বিক্ষোভ ও হরতাল চলাকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ব্যাপক ভাংচুর ও সহিংসতার ঘটনায় জেলা হেফাজতে ইসলামের সহ-প্রচার সম্পাদক এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া জামিয়া ইসলমীয়া ইউনুছিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক মুফতি জাকারিয়া খানকে (৪৩) গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

জেলা পুলিশের একটি বিশেষ টিম রোববার রাত সাড়ে ১১টার দিকে শহরের বঙ্গবন্ধু স্কয়ারের জাতীয় বীর আবদুল কুদ্দুস মাখন মুক্ত মঞ্চের সামনে থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে। এ ছাড়া গত ২৪ ঘন্টায় আরও ৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে সোমবার এ তথ্য জানানো হয়েছে। 

 এতে বলা হয়, গ্রেপ্তার মুফতি জাকারিয়া খান প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন যে, গত ২৬, ২৭ ও ২৮  মার্চ  হেফাজতের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের নির্দেশে সরকার উৎখাতের সুদূর প্রসারী পরিকল্পনার অংশ হিসেবে জামিয়া ইসলামীয়া  ইউনুছিয়া মাদ্রাসাসহ আশেপাশের বিভিন্ন মাদ্রাসার ছাত্র শিক্ষককে নিয়ে ব্যাপক তাণ্ডববলীলা চালানো হয়।

জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমতিয়াজ আহমেদ হেফাজত নেতা মুফতি জাকারিয়া খানের প্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, হেফাজতের তাণ্ডবের স্থির ও ভিডিও চিত্র দেখে তাদের  বিভিন্ন জায়গা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

তিনি জানান, এ পর্যন্ত মামলা হয়েছে ৫৬টি। এর মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় ৪৯টি, আশুগঞ্জ থানায় ৪টি, সরাইল থানায় ২টি এবং আখাউড়া রেলওয়ে থানায় একটি। এসব মামলায়  ৪১৪ জন এজাহারনামীয় আসামি ছাড়াও অজ্ঞাতনামা আরো প্রায় ৩৫ হাজার জনকে আসামি করা হয়েছে। এ পর্যন্ত জেলায় গ্রেপ্তার হয়েছে মোট ৩৬৯ জন । 

প্রসঙ্গত, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আগমনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করতে গিয়ে হেফাজতের ব্যানারে মাদ্রাসার ছাত্ররা গত ২৬ মার্চ বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশনে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাাংচুর ও অগ্নিসংযোগ  করে। ওই দিন বিক্ষোভকারীরা বঙ্গবন্ধু স্কয়ারে হামলা চালিয়ে জাতির জনকের ম্যুরাল ভাংচুরসহ পুলিশসুপারের অফিসে ভাংচুরসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ চালায়।

এ ছাড়াও ২৮ মার্চ হরতাল চলাকালে হরতাল সমর্থকরা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, শহীদ ধীরেন্দ্রসনাথ দত্ত ভাষা চত্বর, জেলা শিল্পকলা একাডেমি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভা, সুর সম্রাট স্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ সঙ্গীতাঙ্গন, সদর উপজেলা ভূমি অফিস, আনন্দময়ী কালীবাড়ি মন্দির,জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের বাসভবনসহ সরকারি ও বেসরকারি প্রায় অর্ধশতাধিক স্থাপনা ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করে ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে মৃত্যুপুরীরেত পরিণত করে।