শেখ হাসিনার নেতৃত্বের কারণে দেশে কোন বিপর্যয় ঘটেনি: ড. সেলিম মাহমুদ

এই মানবিকতার বিষয়ে বলতে গেলে বলা যায় আমরা ব্যক্তিগতভাবে, দলগতভাবে কিভাবে মানুষের পাশে আছি সেটাই আলোচ্য বিষয়। বাঙালির সংস্কৃতি হচ্ছে যার যা কিছু আছে তাই নিয়েই যেকোনো দুর্যোগে মানুষের পাশে দাঁড়ানো। এই মহামারিতে আওয়ামী লীগ ছাড়া আর কোন রাজনৈতিক দল মাঠে নামেনি। কোন এনজিও, কোন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান মাঠে নামেনি। আমরা আগে দেখতাম যেকোনো দুর্যোগে অনেকেই মাঠে নামতো। কিন্তু এইবার শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ ছাড়া আর কোন দল মাঠে নামেনি এবং সেজন্য আওয়ামী লীগকে খুব বড় ধরনের ত্যাগ করতে হয়েছে। মানুষের পাশে দাঁড়াতে গিয়ে আমাদের অনেক বড় বড় নেতাকর্মীদের চিরদিনের জন্য হারাতে হয়েছে। 
দৈনিক ভোরের পাতার নিয়মিত আয়োজন ভোরের পাতা সংলাপের ৪১১তম পর্বে রোববার (২৫ জুলাই) আলোচক হিসেবে উপস্থিত হয়ে এসব কথা বলেন- স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান, ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব রেডক্রস এন্ড রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির গভর্নিংবডি সদস্য, সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা. হাবিবে মিল্লাত, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ, আওয়ামী লীগ নেতা ফাইয়াজুল হক রাজু। দৈনিক ভোরের পাতা সম্পাদক ও প্রকাশক ড. কাজী এরতেজা হাসানের পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সাবেক তথ্য সচিব নাসির উদ্দিন আহমেদ।
ড. সেলিম মাহমুদ বলেন, অফিসিয়ালি পৃথিবীর সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ দেশ হচ্ছে বাংলাদেশ। পৃথিবীতে জনসংখ্যার ঘনত্ব হচ্ছে প্রতি কিলোমিটারে ৫৮ জন। দক্ষিণ এশিয়াতে এই গড় হচ্ছে ৩৮০ জন, নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে হচ্ছে মাত্র ৬৭ জন সেখানে আমাদের দেশে জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রতি কিলোমিটারে ১২৪০ জন। এবার বুঝেন আমাদের মতো এই দেশে যেখানে জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রতি কিলোমিটারে এতো বেশি সেখানে এই আক্রমণাত্মক ভাইরাসটি লণ্ডভণ্ড করে দিতে পারতো। এইরকম একটি বেশি জনসংখ্যার ঘনত্বপূর্ণ এই ছোট্ট রাষ্ট্রে আল্লাহর অশেষ রহমতে ও আমাদের বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গত দেড় বছরে এই করোনা মহামারি মোকাবিলা করেছে সেটা আসলেই প্রশংসনীয়। গত দেড় বছর বা তার থেকেও কম সময়ের মধ্যে পৃথিবীর অন্যতম পরাশক্তির দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যারা অর্থনৈতিকভাবে সামরিকভাবে সবার থেকে এগিয়ে সেখানে সাড়ে ৬ লাখের বেশি মানুষ সেখানে মারা গিয়েছে। ব্রাজিলে সাড়ে ৫ লাখ মানুষ মারা গিয়েছে। ভারতে সাড়ে ৪ লাখের বেশি মানুষ মারা গেল, মেক্সিকোতে আড়াই লাখের বেশি, পেরুতে দুই লাখের মতো, যুক্তরাজ্যে দেড় লাখ;  সেখানে আমাদের বঙ্গবন্ধু কন্যা রাষ্ট্রনায়ক জননেত্রী শেখ হাসিনা কিভাবে একটা বড় ধরনের মানবিক বিপর্যয় হতে পারতো বাংলাদেশে সেটাকে তিনি অত্যন্ত সাহসী মনোবল, দক্ষতা, মেধা ও কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে এখনো এই পরিস্থিতিকে আমাদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেরেছেন। এখানে এখন অনেকেই বলতে পারে আজকেও বাংলাদেশে ২০০ এর বেশি মানুষ মারা গিয়েছে, অনেকেই আক্রান্ত হয়েছে। অবশ্যই প্রতিটি মানুষের জীবনই কিন্তু মূল্যবান আমাদের জন্য কিন্তু তারপরেও আমাদের বাস্তবতাটা মেনে নিতে হবে যে, এইরকম একটা পরিস্থিতিতে তিনি যেভাবে সামাল দিয়ে গিয়েছেন সেটা আসলেই অতুলনীয়। আমাদের এখানে বড় ধরনের বিপর্যয় ঘটেনি, যে বিপর্যয় আমরা দেখেছি সেটা আমেরিকাতে, ইন্দোনেশিয়াতে, ইউরোপে এমনকি মাত্র কয়েকদিন আগে ইন্দোনেশিয়াতে যে অবস্থা হয়েছে যেখানে হাজার হাজার মানুষ মারা গিয়েছে, প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতে কি তাণ্ডবলীলা হয়েছে। সে হিসেবে করোনা সংক্রমণটা আমাদের দেশে একেবারেই উচ্চ পর্যায়ে যায়নি অর্থাৎ ভেঙে ভেঙে একটা স্থিতিশীল পর্যায়ে রয়েছে। এই ধরনের মহামারিতে যখন একসাথে অধিক সংখ্যক মানুষ আক্রান্ত হয় তখন কিন্তু রাষ্ট্র ব্যবস্থা বা হাঁসপাতাল ব্যবস্থা কাজ করে না যেটা আমরা এই সাম্প্রতিক সময়ে দেখেছি। এই ধরনের বিপর্যয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে প্রায় ৩ কোটি মানুষের কাছে সহযোগিতা পৌঁছেছে এবং এটা বাংলাদেশের প্রতিটি জেলায় প্রতিটি ইউনিয়নে পৌঁছেছে। একটা সত্যি কথা এখন বললে অনেকের মন খারাপ হতে পারে যে, এই মহামারিতে আওয়ামী লীগ ছাড়া আর কোন রাজনৈতিক দল মাঠে নামেনি। কোন এনজিও, কোন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান মাঠে নামেনি। আমরা আগে দেখতাম যেকোনো দুর্যোগে অনেকেই মাঠে নামতো। কিন্তু এইবার শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ ছাড়া আর কোন দল মাঠে নামেনি এবং সেজন্য আওয়ামী লীগকে খুব বড় ধরনের ত্যাগ করতে হয়েছে। মানুষের পাশে দাঁড়াতে গিয়ে আমাদের অনেক বড় বড় নেতাকর্মীদের চিরদিনের জন্য হারাতে হয়েছে। এই করোনা মহামারিতে তিনি মানুষের জীবন বাঁচানোর জন্য, দেশের অর্থনীতিকে বাঁচানোর জন্য যে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন, যে দিন-রাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন তার জন্য আমরা তাকে সাধুবাদ জানাচ্ছি। তাঁর একজন কর্মী হিসেবে এই মানবিক কাজে নিজেকে নিয়োজিত রাখতে পেরে আমি নিজেকে অনেক গর্বিত মনে করি।